মেডিকা শুরু করল জেলা স্তরে স্তন ও সার্ভিকাল ক্যান্সার ডায়াগনোসিস

Date:

Share:

মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল, অন্যতম একটি বড় প্রাইভেট হসপিটাল চেন এবং পূর্ব ভারতে পুরোদস্তুর ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি ট্রেন্ডসেটার, সামনের ৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালন করতে চলেছে একাধিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এই অনুষ্ঠানগুলোর লক্ষ্যই হল মানুষের মধ্যে ক্যান্সার নিয়ে সচতনতা গড়ে তোলা, সাপ্তাহিক স্ক্রিনিং করা এবং পশ্চিমবঙ্গের ৬টি জেলায় মহিলাদের জন্য কনসালটেন্সি পরিষেবা শুরু করা।

মেডিকা ক্যান্সার হসপিটাল এক মাস ভিত্তিক স্ক্রিনিং শুরু করতে চলেছে, যা শুরু হবে ৪ই ফেব্রুয়ারি থেকে আর চলবে ৮ই মার্চ অবধি। এটি সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে হবে এবং এই স্ক্রিনিং এর মধ্যে থাকবে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, ম্যামোগ্রাম এবং প্যাপ স্মিয়ার। মেডিকার অনকোলজি টিম দায়বদ্ধ কমিউনিটি স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে। তাদের প্রচেষ্টাগুলো ক্যান্সার ধরা পড়া এবং আটকানোর ক্ষেত্রে যে ফারাক রয়েছে বর্তমানে, তা কমাতে সাহায্য করবে। বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ২০২৪ হচ্ছে তৃতীয় বছর, পর পর যেখানে ‘ক্লোজ দ্য কেয়ার গ্যাপ’ ক্যাম্পেইন রান করানো হবে, যাতে সমতা আনা যেতে পারে পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে। এই বছরের লক্ষ্য হল যাতে আরো নতুন সংস্থা কাছাকাছি এসে এবং সকল সমমনস্ক মানুষকে নিয়ে জোরালো দাবি তোলা মানুষের কাছে। এই উপলক্ষ্যে একটি সেশনের আয়োজন করা হয়েছিল প্রেস ক্লাবে। এই সেশনে অংশগ্রহণ করেন প্রফেসর (ডঃ) সুবীর গাঙ্গুলি, সিনিয়র কনসালটেন্ট, অ্যাডভাইজার, রেডিয়েশন অনকোলজি, ডঃ অরুণাভ রায়, সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং গাইনিলজিক অনকোলজি এবং রোবোটিক সার্জারির বিভাগীয় প্রধান, ডঃ সায়ন দাস, সিনিয়র কনসালটেন্ট, ড. सौমিত্র ভারদ্বাজ (সমুহ প্রধান মার্কেটিং অফিসার), ডঃ প্রদীপ কুমার মন্ডল, কনসালটেন্ট, মেডিক্যাল এবং হেমাটো – অনকোলজি এবং রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগীয় প্রধান, ডঃ পূজা আগরওয়াল, কনসালটেন্ট, সার্জিক্যাল অনকোলজি (স্তনের সার্জারি)।

একটি ক্যান্সার সচেতনতা র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে ৪ই ফেব্রুয়ারি বহরমপুরে। এই সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে শহীদ ক্ষুদিরাম পাঠাগার এবং ফাইট ক্যান্সার ক্লাবের যৌথ সহায়তায়। একই দিনে আরেকটি র‌্যালির আয়োজন যা শুরু হবে কন্টাই থেকে। এই র‌্যালি আয়োজনের সহায়তায় রয়েছে মেডস্কয়ার হেলথকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড, ডায়াগনস্টিক এবং পলিকলিনিক, লায়ন্স ক্লাব অফ কন্টাই এবং ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (গ্রামীণ শাখা)। এর লক্ষ্য হল ক্যান্সার দ্রুত স্ক্রিনিং এবং ক্যান্সার আটকানোর ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতা গড়ে তোলা। মেডিকা ইতিমধ্যেই শুরু করেছে পূর্ব ভারতের প্রথম বাড়ি ভিত্তিক প্যালিয়েটিভ কেয়ার এবং মনোবিনা ক্লিনিক। এটি প্রমাণ করে যে মেডিকা ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী এবং তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কতটা দায়িত্ববান।

প্রফেসর (ডঃ) সুবীর গাঙ্গুলি, সিনিয়র কনসালটেন্ট, অ্যাডভাইজার, রেডিয়েশন অনকোলজি, বলেন,” স্তন এবং সার্ভিকাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাস্তব জানা ভীষণ দরকার – ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে দেখা গিয়েছে ১৪% ক্ষেত্রেই স্তন ক্যান্সার হয়, প্রতি চার মিনিটে একজন মহিলার ক্ষেত্রে ধরা পড়ে। সার্ভিকাল ক্যান্সার, ৬-২৯% কেসের মধ্যে দেখা যায়, যা বর্তমানে বাড়ছে, এবং এটি শহর ও গ্রামীণ, উভয় ক্ষেত্রেই বাড়ছে উন্নতিশীল দেশগুলোতে। এর গুরুত্ব বোঝা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে বৈষম্য কমিয়ে আনা একান্ত দরকার। মেডিকার অনকোলজি টিম জেলা স্তরে এই নিয়ে কাজ করে চলেছে। কলকাতা বা শহরাঞ্চল শুধু নয়, এর বাইরের এলাকার দিকেও আমাদের লক্ষ্য রয়েছে। আমরা জানি যে ক্যান্সার জনসংখ্যার কোন স্তরে বেড়ে চলেছে এবং দ্রুত ক্যান্সার ধরা পড়া কতটা দরকার। অনেক সময়েই গ্রামীণ এবং আধা শহর এলাকায় বেশি ক্যান্সার দেখা যায় সচেতনতার অভাব এবং সামাজিক ট্যাবুর জন্য। এই ক্যাম্পগুলোয় দুজন করে অভিজ্ঞ ডাক্তার থাকবেন। আমরা বিশ্বাস করি যে ক্যান্সার কোন ভৌগলিক সীমা মানে না। আমরা সর্বাত্মক ভাবে চেষ্টা করছি যাতে উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রতিটি কোণায় কোণায় যেন পৌঁছে যায়।”
ক্যান্সার কেয়ার সার্ভিস দূরে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে হসপিটালের দায়বদ্ধতার কথা আলোচনা করতে গিয়ে ডঃ সৌরভ দত্ত, ডিরেক্টর, মেডিকা অনকোলজি এবং সিনিয়র কনসালটেন্ট, হেড এবং নেক অনকো সার্জারি, বলেন,” ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। কলকাতায় যে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা হয় তা বিশ্বমানের, যদি তুলনা করা হয় বিশ্বের অন্যান্য দেশ বা উন্নতিশীল শহরের সাথে। মেডিকা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নির্ভর ক্যান্সার সার্জারি, ক্যান্সার স্ক্রিনিং এর জন্য সেরা প্রযুক্তি এবং সেরা ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসা বাস্তব করে তুলেছে। প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসার বাইরে চিকিৎসা সম্ভব হয়েছে এখানে মনোবিনা ক্লিনিকের মাধ্যমে, যেখানে ক্যান্সারের কেয়ার গিভার এবং পরিবারকে আশার আলো দেখানো হয়, কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে। এছাড়া রয়েছে পূর্ব ভারতের প্রথম বাড়ি ভিত্তিক প্যালিয়েটিভ কেয়ার ক্যান্সার রোগীদের জন্য, যারা জীবনের শেষার্ধে এসে পৌঁছেছেন। বিশেষ করে এই চিকিৎসায় রোগীদের উপর নজর দেওয়া হয়, নেহাত রোগের চিকিৎসা নয়।”

ডঃ অরুণাভ রায়, সিনিয়র কনসালটেন্ট এবং গাইনিকলজি অনকোলজি এবং রোবোটিক সার্জারির বিভাগীয় প্রধান, বলেন,” এই ৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবসে, আমরা মেডিকা অনকোলজির তরফে লক্ষ্য রেখেছি ক্যান্সার কেয়ার গ্রাম বাংলা এবং আধা শহর এলাকায় পৌঁছে দেওয়া। এই সমস্ত জায়গায় ক্যান্সার স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসা খুবই সীমিত এবং সকলের কাছে সেই পরিষেবা পৌঁছানো যায়নি একাধিক কারণে। তাই আমরা পৌঁছে গিয়েছি মুর্শিদাবাদ আর মেদিনীপুরের অনেক মানুষের কাছে। আমরা স্থানীয় নির্বাচিত সংস্থার কাছে কাজ করে চলেছি যাতে সচেতনতা, ক্যান্সার আটকানো এবং দ্রুত স্ক্রিনিং নিয়ে মানুষ জানতে পারে। আমরা একটি টিম হিসেবে কাজ করছি যেখানে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিশেষজ্ঞরা রয়েছেন, যারা অত্যাধুনিক এবং সেরা ক্যান্সার চিকিৎসা পৌঁছে দিচ্ছেন পূর্ব ভারতের বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে।”
আর উদয়ন লাহিড়ী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটাল, বলেন,” সার্ভিকাল ক্যান্সারের ক্ষেত্রে টিভিতে বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে সচেতনতা তৈরি করা সম্ভব নয়। এই তথ্যের ফারাক বা অসঙ্গতি অনেক ভুল ধারণা তৈরি করেছে মানুষের মধ্যে, যার মধ্যে অন্যতম হল যে ক্যান্সারের সফল চিকিৎসা সম্ভব নয়। এই সচেতনতার অভাবের অন্যতম কারণ হল ট্রিটমেন্ট বা চিকিৎসার কি প্রভাব পড়বে, বা কাজ হবে, সেই নিয়ে সম্যক ধারণা না থাকায়। জেলা স্তরে স্ক্রিনিং এবং কনসালটেন্সির ক্ষেত্রে মেডিকার ভূমিকা হল এই ভুল ধারণা গুলো খন্ডন করা।”
অয়নাভ দেবগুপ্ত, জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল, বলেন,”একটি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে , আমাদের সেরা অনকোলজি টিম রয়েছে এবং ৫০০ র বেশি বেড রয়েছে কলকাতা, শিলিগুড়ি, রাঁচি এবং আসানসোল হতে চলা নতুন ইউনিটে। আমাদের দায়িত্ব হল জেলার মানুষদের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া এবং পরিষেবা প্রদানে যে ফারাক রয়ে গিয়েছে, সেটা কমানো। বিশেষ করে যেখানে রোগী আর ডাক্তারের মধ্যে দূরত্ব থেকে গিয়েছে। আমরা সার্ভিকাল এবং স্তনের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে যেই নৈঃশব্দ্য রয়ে গিয়েছে সেটা ভাঙতে চাই এবং সচেতনতা ও শিক্ষা দিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি করতে বদ্ধপরিকর।”
মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটাল সম্পর্কে: মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটাল, বর্তমানে পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রধান হসপিটাল চেন, একাধিক স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র তৈরি করেছে পূর্ব ভারতে, শেষ কয়েক বছরে। বর্তমানে এই গ্রুপের উপস্থিতি রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, বিহার এবং আসামে।

Sr. No. শহর জেলাদিনস্ট্যাটাস
1কন্টাই এবং তমলুকপূর্ব মেদিনীপুর প্রতি শুক্রবার শেষ দুই মাস ধরে চলছে 
2আরামবাগ এবং শ্রীরামপুর হুগলি প্রতি বৃহস্পতিবার  ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে 
3বারাসাত এবং দমদমউত্তর চব্বিশ পরগনা প্রতি বুধবার ২৪শে ফেব্রুয়ারি থেকে 
4বহরমপুরমুর্শিদাবাদ প্রতি বুধবার ২৭শে ফেব্রুয়ারি থেকে 
5কৃষ্ণনগর নদীয়া প্রতি মঙ্গলবার ২৭শে ফেব্রুয়ারি থেকে  
6শিলিগুড়ি দার্জিলিং প্রতি শনিবার শেষ দুই বছর ধরে চলছে 

Subscribe to our magazine

━ more like this

কেতুগ্রামে সামন্ত পরিবারের ১৭৯ বছরের ঐতিহ্যশালী কালিপুজো

পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামে সামন্ত বাড়ির পুজো ভিন্ন মাত্রা এনেছে গোটা এলাকাজুড়ে।১৭৯ বছরে পদার্পণ করলো এবারের পুজো। জানা গেছে, ১৭৯ বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে...

Kolkata to Host Global Brand Guru Erich Joachimsthaler at the 24th Edition of India’s Leading Brand Management Platform – CII Brand Conclave 2025

CII today announced that renowned international brand strategist and author Dr Erich Joachimsthaler will visit Kolkata to lead the 24th edition of CII Brand...

RSB Retail’s South India Shopping Mall Opens Its 35th Flagship Showroom in Hubbali, Karnataka

The favourite shopping destination of Telangana and Andhra Pradesh, South India Shopping Mall marked a major milestone by stepping into Karnataka with the grand...

Around 11,45,000 students participated in Aakash Educational Services Ltd’s prestigious National Scholarship Exam, ANTHE 2025

Aakash Educational Services Ltd. (AESL), the national leader in test preparatory services for aspiring doctors and IITians, with more than 415 centers across the...

Festive Season and Your Heart: How to Balance Indulgence with HealthDr Sunandan Sikdar, Consultant- Cardiology, Narayana Hospital, Barasat

The festive season brings joy, color and community celebrations. Yet, alongside the lights and music, the festive season can also create invisible stress on...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here