১৪ই নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসে, নারায়ণা হাসপাতাল ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করছে, এবং এই রোগ প্রতিরোধের জন্য সম্প্রদায়কে শিক্ষিত ও উদ্বুদ্ধ করছে। ডায়াবেটিস লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে, এবং হাসপাতালটি প্রাথমিক সনাক্তকরণ, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, এবং বিশেষজ্ঞের সহায়তায় দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা রোধের উপর জোর দিচ্ছে, যেন এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আরও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারে।
নারায়ণা হাসপাতাল আরএন টেগোর হাসপাতাল, মুকুন্দপুরের সিনিয়র কনসালটেন্ট এন্ডোক্রিনোলজিস্ট অধ্যাপক ডাঃ দেবমাল্য সান্যাল এই দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বলেন, “বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আমাদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও সক্রিয় ব্যবস্থাপনার গুরুত্বকে তুলে ধরে। ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা, শিক্ষা এবং সময়মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে জটিলতা এড়ানো যায় এবং হৃদয়, কিডনি, চোখ, ও স্নায়ু সহ বিভিন্ন অঙ্গে প্রভাব রোধ করা যায়। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, নিয়মিত রক্তের শর্করা পরিমাপ এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চললে জীবন বদলে যেতে পারে। আসুন সকলে মিলে প্রাথমিক সনাক্তকরণ, উন্নত চিকিৎসা সেবা এবং রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করি। একসঙ্গে আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি, যেখানে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সুস্থ ও সুখী জীবনযাপন করতে সক্ষম হবে।”
নারায়ণা হাসপাতাল, হাওড়ার সিনিয়র কনসালটেন্ট ডায়াবেটোলজিস্ট এবং এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডাঃ সঞ্জয় কে শাহ ডায়াবেটিসের প্রায়শই নীরব প্রকৃতি নিয়ে আলোকপাত করে বলেন, “ডায়াবেটিস একটি উচ্চ রক্তশর্করা অবস্থা, যা প্রাথমিকভাবে লক্ষণ ছাড়াই থাকতে পারে এবং সনাক্ত করাও কঠিন। ডায়েট ও ব্যায়ামের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, তবে প্রাথমিকভাবে ওষুধ গ্রহণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলিকে সুরক্ষা দেয়। ডায়াবেটিস প্রায়শই উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং ওজন সমস্যার সাথে সম্পর্কিত, যা নিয়ন্ত্রণ ও সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে দ্রুত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার প্রধান লক্ষ্য শুধু রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং হৃদয়, কিডনি, চোখ, মস্তিষ্ক, স্নায়ু ও লিভারসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির সুরক্ষা। প্রাথমিক পর্যায়ে এই অঙ্গগুলির রোগের লক্ষণগুলি দেখা যায় না, তাই নিয়মিত চেক-আপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে সময়মতো সুরক্ষামূলক চিকিৎসা শুরু করা যায়। সচেতন রোগী, যিনি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন, সাধারণত ভালোভাবে জীবনযাপন করেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে সক্ষম হন।
ডায়াবেটিস শিক্ষকদের সহায়তায় আপনার জীবনকে ডায়াবেটিস সম্পর্কিত জটিলতা মুক্ত রাখুন। জীবনযাত্রার পরিবর্তন যেমন সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান, তামাক এবং অতিরিক্ত লবণের ব্যবহার এড়ানো, আধুনিক ওষুধকে কার্যকর করে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডাঃ শাহ শেষে বলেন, “এই বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসে, সুস্থ থাকুন, সুরক্ষিত থাকুন, এবং সচেতন থাকুন।”
চিকিৎসকরা জোর দিয়ে বলেন যে, জীবনযাত্রার পরিবর্তন—যেমন সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং তামাক ও অতিরিক্ত লবণ পরিহার—যথেষ্ট প্রয়োজনীয় হলেও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই সংমিশ্রণ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর এবং গুরুতর জটিলতা প্রতিরোধে সহায়ক।
নারায়ণা হাসপাতাল সকলকে ডায়াবেটিস সচেতনতা ও প্রাথমিক চিকিৎসার উপর গুরুত্বারোপ করতে উদ্বুদ্ধ করছে, যেন সকলে একটি সুস্থ এবং পরিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারে।