ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন ডিজাইন বা ভি.এল.এস.আই ডিজাইন তথা সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন শিল্প ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতিতে যথেষ্ট অবদান রেখে চলেছে। তারই অঙ্গ হিসেবে ৩৭তম ভিএলএসআই ডিজাইনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং ২৩ আন্তর্জাতিক এমবেডেড সিস্টেম সম্মেলন তিলোত্তমা কলকাতার বুকে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সক্রিয় সহায়তায় আগামী ৬ থেকে ১০ জানুয়ারি ২০২৪ আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গলে অনুষ্ঠিত হবে।
ভিএলএসআই তথা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শিল্প সংস্থা, শিক্ষাবিদ, স্টার্টআপ উদ্যোগী প্রায় সহস্রাধিক প্রতিনিধি পাঁচদিন মহানগরে এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। এ বছরের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের থিম “ভিএলএসআই মিটস এআই অ্যান্ড কোয়ান্টাম ফর সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেমস’। অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও কোয়ান্টাম কম্পিউটারের ফলিত প্রয়োগে ভিএলএসআই আধুনিক করার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলবে এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে। ভারতের অর্থনীতির পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে তাতে ইলেক্ট্রনিক সেমিকন্ডাক্টরের অবদান প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার থাকবে বলে পূর্বাভাস। ভারত সরকারের ন্যাশানাল পলিসি অন ইলেক্ট্রনিক্স ২০১৯ তাই যথার্থই সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে জোর দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ইতিবাচক পরিমন্ডলে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
সম্মলনের সাধারণ সভাপতি তথা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, শিবপুরের অধ্যাপক ড: হাফিজুর রহমান বলেন, “এই সম্মেলন পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিশাল সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে। শুধু এই রাজ্য নয় সমগ্র পূর্ব ভারতের জন্যই সুখবর বয়ে আনবে এই সম্মেলন। আমাদের বিশ্বাস পশ্চিমবঙ্গ সরকারে সক্রিয় সহায়তায় এই রাজ্য ‘সেমিকন্ডাক্টর প্রডাক্ট রাজ্য’ হিসেবে পরিগণিত হবে। এই শিল্প স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহনের প্রয়োজন নেই। আমাদের রাজ্যে রয়েছে প্রচুর তরুণ প্রতিভাবান ছাত্র-ছাত্রী যারা এই শিল্পের অগ্রগতিতে অবদান রাখতে পারবে। আমাদের বিশ্বাস ভিএলএসআই তথা সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে সঠিক অভিনিবেশ করলে প্রতি বছর ১০হাজার তরুণের কর্মসংস্থান করা সম্ভব হবে।”
সম্মেলনে ৮০টি উন্নত মানের আইইই গবেষণাপত্র প্রকাশিত হবে। তরুণ প্রজন্মের জন্য ১০টি টিউটোরিয়াল সেসন অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন শিল্প সংস্থার প্রায় ১০০টি স্টল প্রদর্শিত হবে। ভিএলএসআই পাঠরত ৩০০ ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষককে ফেলোশিপও প্রদান করা হবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে। সম্মেলনে এমআইটি, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক-অধ্যাপকেরা যোগ দিচ্ছেন। মাইক্রোসফ্ট, গুগল, ইন্টেল, কোয়ালকম, আইবিএম, এইচসিএল, জুনিপার স্যামসাঙ সহ বহুজাতিক সংস্থাও উপস্থিত থাকবে ও নতুন উদ্ভাবন প্রদর্শিত হবে।