কেন্দ্রীয় সরকারের বানিজ্য মন্ত্রক গত ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে পণ্যেরমানগত উৎকর্ষতার জন্য একটি বিশেষ লাইসেন্স নিতে হবে ঢালাই লোহার পণ্য উৎপাদনকারীদের। লাইসেন্সটি ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের নির্ধারিতমাত্রা অনুযায়ী। কাস্ট আয়রন প্রোডাক্টস কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার ২০২৩ শীর্ষক বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর কার্যকর হবে আগামী ছয় মাসে। এই প্রেক্ষিতেশুক্রবার সন্ধ্যায় ঢালাই লোহার পণ্য উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীদের নিয়ে মধ্য কলকাতার একটি পাঁচ তারা খচিত হোটেলে সেমিনারের আয়োজন করে ইন্ডিয়ান ফাউন্ড্রি এসোসিয়েশন ও ফাউন্ড্রি ক্লাস্টার ডেভলপমেন্ট এসোসিয়েশন।
অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যের ঢালাই লোহার পণ্য উৎপাদনকারীরা। সরকারি ঘোষণার বিস্তারিত তথ্য ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে ধরতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আই এফএ ‘ চেয়ারম্যান আকাশ মাধোগড়িয়া, এফ সি ডি এ র জয়েন্ট চেয়ারম্যান বিজয় বেরিওয়াল, আই আই এফের স্ট্যান্ডার্ডস উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান দীনেশ গুপ্তা, এফআই সির চেয়ারম্যান প্রদীপ মিত্তাল, বি আই এসের বিজ্ঞানী , ডেপুটি ডিরেক্টর , কলকাতার মৈনাক গন্টাইত ও প্রযুক্তিবিদ দেবরাজ ব্যানার্জি। ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে উদ্যোক্তাদের তরফে বিস্তারিত জানানো হয়।
উল্লেখ করা যায়,২০১৮ এর তথ্য বলছে বিশ্বে চিন সর্বাধিক ঢালাই লোহা উৎপাদন করে। বার্ষিক উৎপাদন ৯২৮ মেট্রিক টন উৎপাদনের নিরিখে। এরপরেই ভারত বার্ষিক উৎপাদন ১০৬ মেট্রিক টন। তৃতীয় স্থানে জাপান । যাদের উৎপাদন ১০৬ মেট্রিক টন। চতুর্থ স্থানে আমেরিকা। উৎপাদন বার্ষিক ৮৭ মেট্রিক টন। ২০২৪ সালে ভারতে ১৯.৪৬ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে।আসা করা যাচ্ছে আগামী ২০২৯ সালে এই পরিমাণ হবে ৩১.৭৭ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে প্রায় ৩০ শতাংশ। পণ্যের মানগত উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞপ্তি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জারি হলেও তথ্য বলছে, দেশে ঢালাই লোহার পণ্য উৎপাদন করে দেশের ৮৫ শতাংশ ছোট ও ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী১০ শতাংশ মাঝারি উৎপাদক ও বৃহৎ উৎপাদক ৫ শতাংশ মাত্র। এই শিল্পে মূল সংকট পরিবেশগত, পুরানো প্রযুক্তি, বিশ্বের নিরিখে রপ্তানিতে চিনের সঙ্গে অসম প্রতিযোগিতা ও দক্ষ শ্রমিকের অভাব। এই সংকটের সুরাহা না করে শুধু ঢালাই লোহাজাত পণ্যের গুণগত মান রক্ষার জন্য বিজ্ঞপ্তি ব্যবসায়ীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া কতটা প্রাসঙ্গিক সেটাও সরকারি বানিজ্য মন্ত্রকের বিবেচনায় রাখা উচিত। এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বড় ও মাঝারি উৎপাদকরা যতটা ফলপ্রসূ হবেন ছোট বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য দ্রুত সীমাবদ্ধ ক্ষমতায় নিজেদের অগ্রণী করে তোলা অসম্ভব না হলেও কষ্টকর হবে। সেক্ষেত্রে ছ মাসের সময়সীমা নয়ত শাস্তি , কতটা বাস্তবাচিত সেটা সরকারি দফতরের বিবেচনার কাজ।