দক্ষিণ কলকাতার উইশডম ট্রি, শহরের বুকে একটা নতুন আর্ট স্পেস ( ৪৯ যতীন দাস রোড ) জুড়ে বাঙালি সঙ্গীত পরিচালকদের কাজের বিরল সম্ভার দেখা গেল সম্প্রতি। কোথাও শচীন দেব বর্মনের সুরে জজ সাহেবের নাতনি ছবির ৭৮ আরপিএম রেকর্ড, কোথাও সুধীন দাশগুপ্তের সুরে বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের স্মরণে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গাওয়া গানের রেকর্ড, আবার কোথাও রবীন চট্টোপাধ্যায়ের সুরে সুচিত্রা সেনের গানের রেকর্ড তো কোথাও নচিকেতা ঘোষের সুরে উত্তম কুমারের গাওয়া গানের রেকর্ড, এর পাশাপাশি রাহুল দেব বর্মনের সুরে আশা ভোঁসলের পুজোর গানের প্রচারপত্র, আবার এমন রবীন্দ্রনাথের গানের রেকর্ড যখন রবি ঠাকুরের গান ‘রবীন্দ্র সঙ্গীত ‘ হয়ে ওঠেনি, রেকর্ডে লেখা কথা ও সুর রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর, বা মনিহারা ছবিতে রুমা গুহ ঠাকুরতার কন্ঠে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গীত নির্দেশনায় বাজে করুন সুরে গানের রেকর্ড।
বাঙালি সঙ্গীত পরিচালকদের সুরের ম্যাজিককে সেরাম থ্যালাসেমিয়া প্রিভেনশন ফেডারেশন এর বিশ্ব সঙ্গীত দিবস উপলক্ষে এক বিশেষ স্মরণ-প্রদর্শনী ” সুরের ঝর্ণা”অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। শুভ সূচনা হয় ১৪ জুন, চলে ১৬ জুন পর্যন্ত । সংগ্রাহক সুদীপ্ত চন্দের সংগ্রহ থেকে আয়োজিত এই বিশেষ প্রদর্শনীতে ছিল বাঙালি সুরকারদের সুরারোপিত ছবির পোস্টারও। পঙ্কজ কুমার মল্লিকের সুরে মুক্তি ছবির পোস্টার, রবি শঙ্করের সুরে কাবুলিওয়ালা,সলিল চৌধুরীর সুরে সিস্টার, সত্যজিৎ রায়ের সুরে বাক্স বদল, সুধীন দাশগুপ্ত এর সুরে জীবন সৈকতে, নচিকেতা ঘোষের সুরে ইন্দ্রানী, শচীন দেব বর্মণের সুরে চৈতালি, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে শাপমোচন, অনীল বাগচী এর সুরে অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের সুরে মায়ামৃগ ছবির পোস্টার তথা আরো অনেক দিকপাল সুরকারদের সুরারোপিত ছবির পোস্টার ছিল এই প্রদর্শনীতে। বাঙালি সঙ্গীত পরিচালকদের মধ্যে গোপেন মল্লিক, অনুপম ঘটক,জ্ঞান প্রকাশ ঘোষ , রবীন চট্টোপাধ্যায়, রাহুল দেব বর্মন, বাপী লাহিড়ী, বীরেশ্বর সরকার প্রমুখের সুরারোপিত ছবির পোস্টার ছিল এই প্রদর্শনীতে। সেরাম থ্যালাসেমিয়া প্রিভেনশন ফেডারেশন এর সম্পাদক সঞ্জীব আচার্য্য জানালেন, ” বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে শহরে নানা সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়।তার মধ্যে আমরা একটু অন্যরকম আয়োজন করলাম।
এই বিশেষ প্রদর্শনীতে যে সকল জিনিস দেখার সুযোগ করে দেওয়া হল তা দর্শকদের ফেলে আসা বাংলা গানের গৌরবময় অধ্যায়ের কথা মনে করাবে । সেই সব সঙ্গীত শ্রষ্টাদের আমাদের প্রণাম। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুরা সেই সময়ের গানের রেকর্ড, সিনেমার পোস্টার দেখেনি। ওদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্যেও আমারা নানারকম সাংস্কৃতিক কাজ করে থাকি।” ১৪ জুন প্রদর্শনীর উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন সৈকত মিত্র, সুপর্ণ কান্তি ঘোষ, সৌম্য দাশগুপ্ত, রাজীব গুপ্ত, ঝিনুক গুপ্ত, দেবজিত বন্দোপাধ্যায়, দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় সহ বহু বিশিষ্টজনেরা।