মণিপাল হসপিটাল শুরু করল ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে এর উপর বিশেষ ক্যাম্পেন

Date:

Share:

শহরকে সুস্থ হার্ট এর ভবিষ্যৎ প্রদান করতে মণিপাল হসপিটাল, যারা ভারতের সেরা স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার অন্যতম, আজ শুরু করল ‘হৃদয় জুড়ে কলকাতা’ প্রয়াস। এই ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছে ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে উদযাপন করার আগেই, বিশ্ব ব্যাপী যা সাধারণত পালন করা হয়ে থাকে সেপ্টেম্বরের ২৯ তারিখ। কিছু আলোচনাধর্মী সেশন আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে যোগদান করেন বিভিন্ন কার্ডিয়াক স্পেশালিস্ট, যারা কলকাতায় মণিপাল হসপিটালের বিভিন্ন ইউনিট থেকে এসেছিলেন। কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য নিয়ে তারা নিজেদের মতামত জানান এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রোপচার নিয়ে জানান, যেগুলো মেডিক্যাল ডিসকোর্স নিয়ে সার্বিক ভাবে রোগীর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছে। এরপর ছিল একটি ভাব আদান প্রদানের সেশন এবং সম্বর্ধনা দেওয়া হয় হার্ট হিরোদের। এই হার্ট হিরোরা হচ্ছেন সেই সমস্ত রোগী মণিপাল হসপিটালে টিএভিআই (TAVI), সিএবিজি (CABG), ভালভ বদল, এভিআর (AVR) সহ একাধিক পদ্ধতির মাধ্যমে হার্টের সমস্যা কাটিয়ে উঠেছেন।
এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরুণ চন্দ, খ্যাতনামা অভিনেতা এবং লেখক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কার্ডিওলজি বিভাগের বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ যথাক্রমে ডঃ প্রকাশ কুমার হাজরা, ডিরেক্টর এবং বিভাগীয় প্রধান কার্ডিওলজি, মণিপাল হসপিটালস, ঢাকুরিয়া, ডঃ রবীন চক্রবর্তী, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল (মণিপাল হসপিটালের একটি অংশ), ডঃ কুণাল সরকার, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং কার্ডিয়াক সার্জারির প্রধান, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল (মণিপাল হসপিটালের অংশ) এবং অয়নাভ দেবগুপ্ত, রিজিওনাল সিওও, মণিপাল হসপিটাল (পূর্ব) যারা এই সাধু প্রয়াস নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
এই ইভেন্টে আর দুটো অসাধারণ সচেতনতা মূলক প্রয়াসের উদ্বোধন হয়। ওয়ান স্ক্যান কেন সেভ আ লাইফ – একটি স্ক্যান একটি জীবন বাঁচাতে পারে, যেখানে ট্রাফিক সিগন্যালে বোর্ডের মধ্যে কিউ আর কোড দেওয়া থাকবে। এখানে স্ক্যান করে সাধারণ মানুষ সাথে সাথেই যোগাযোগ করতে পারবে মার্স (মণিপাল অ্যাম্বুলেন্স রেসপন্স সার্ভিস) এর সাথে, যা ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে। এর সাথে রয়েছে ভিডিও টিউটোরিয়াল, যা দেখে সিপিআর (কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিয়েশন প্রসিডিউর)। এই কাজের সাথে যুক্ত থাকার জন্য, বিধাননগর পুলিশ কমিশনারের সহযোগিতায় হার্ট আকারের ইমোজি ২৫ শে সেপ্টেম্বর শনিবার রাত থেকে ৩০ শে সেপ্টেম্বর জ্বলবে। এই অদ্ভুত নতুন ট্রাফিক সিগন্যাল হার্ট সুস্থ থাকার দিকটি নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হবে।
এই হৃদয় জুড়ে কলকাতা ক্যাম্পেনের লক্ষ্য হল সুনিশ্চিত করা যাতে অন্তত তিন শতাংশ ভারতীয়রা সিপিআর (CPR) প্রয়োগ করতে শেখে। মণিপাল হসপিটাল বিস্তৃত ভাবে সি পি আর ট্রেনিং প্রোগ্রাম আয়োজন করেছে কমিউনিটি মেম্বারদের জন্য, যার মধ্যে রয়েছে রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (RWA), স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা, স্টাফ এবং প্রিন্সিপালরা, সিকিউরিটি গার্ড, পুলিশ, মানব সম্পদের নেতৃত্ব এবং কর্পোরেট চাকরিরতরা। এই সম্পূর্ণ প্রয়াসের নাম দেওয়া হয়েছে হার্ট স্মার্ট কলকাতা যার লক্ষ হল একটি ডেটাবেস তৈরি করা যাতে শহর জুড়ে যেই সব মানুষেরা সিপিআর নিয়ে ট্রেনিং করেছেন, সেই তথ্য থাকে।
এরপর দুটো প্যানেল আলোচনা হয় – মহিলাদের মধ্যে হার্টের সমস্যা এবং কার্ডিয়াক সার্জারি : মিথ বনাম সত্যি – যেখানে মণিপাল হসপিটালের সেরা কার্ডিওলজিস্ট এবং কার্ডিয়াক সার্জনরা মূল্যবান ভাবনা চিন্তা তুলে ধরেন।
অয়নাভ দেবগুপ্ত, রিজিওনাল চিফ অপারেটিং অফিসার, মণিপাল হসপিটালস, পূর্ব, এই প্রয়াসের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বলেন,” হৃদয় জুড়ে কলকাতার লক্ষ্য হল কমিউনিটি তৈরি করা হিরো আর সারভাইভারদের নিয়ে। এই কমিউনিটি তৈরির লক্ষ্যে থাকবে অ্যাকশন বা কার্য প্রণালী আরো উন্নত করা এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এর ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া, কথা ট্রেনিং, প্রস্তুতি এবং রেসপন্স প্রোটোকল আরো উন্নত করা। আমরা একটি হার্ট সেফ কমিউনিটি তৈরি করতে চাই যেখানে সাধারণ মানুষকে সিপিআর এর ট্রেনিং দেওয়া হবে। পূর্ব ভারতে মণিপালের সব হসপিটালেই এই প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। আমরা স্কুল, কলেজ, কর্পোরেট, ক্লাব এবং সকল অ্যাসোসিয়েশনকে এই বার্তা দিতে চাই যে যারা সি পি আর এর ট্রেনিং নিয়েছেন, তারা তাদের কাছের মানুষকেও এই ট্রেনিং দিতে পারেন। এভাবে আমরা দেশ জুড়ে সি পি আর ট্রেনিং প্রাপ্ত রিসোর্স তৈরি করতে পারি, যার সাহায্যে অনেক মানুষকে বাঁচানো সম্ভবপর হতে পারে।”

ডঃ কুণাল সরকার, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের প্রধান, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল (মণিপাল হসপিটালের অঙ্গ), বিশেষ ভাবে আলোকপাত করেন এবং মণিপাল হসপিটালের এই প্রয়াসের প্রতি দায়বদ্ধতার দিকটি দেখিয়ে জানান,” মণিপাল হসপিটালে, আমাদের মূল ভাবনা হল কলকাতা শহরের কার্ডিয়াক কেয়ার এর ক্ষেত্রে বিপ্লব আনা, এবং তার সাথে অত্যাধুনিক ও সেরা চিকিৎসা প্রদান করা। কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বলা হয় মৃত্যুর অন্যতম কারণ, সারা পৃথিবীর সমস্ত মৃত্যুর তিনের এক ভাগ। তাই খুব দরকারী হচ্ছে আটকানো, বা দ্রুত রোগের ধরা পড়া এবং এই পরিস্থিতির আশু মোকাবিলা। হৃদয় জুড়ে কলকাতা এমনই একটা প্রয়াস যা দেখিয়ে দেয় আমাদের শহরকে হার্ট স্মার্ট বানানোর ক্ষেত্রে আমরা কতটা দায়বদ্ধ। আমাদের অন্যতম কৃতিত্ব হল কুইক রেসপন্স কোডের (QR) এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রসর হওয়া। এই অ্যাকসেসের লক্ষ্য হল ইমার্জেন্সী সাহায্য করা বা সিপিআর প্রয়োগ এবং হার্ট শেপের ট্রাফিক সাইন দেওয়া, যাতে বৃহত্তর সমাজকে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ নিয়ে সচেতন করা যায়। আমরা এক চূড়ান্ত প্রভাব ফেলতে চাই যার ফলে মানুষের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিপিআর ভারতের মোট জনসংখ্যার তিন শতাংশ কভার করতে পারে। একটি টিম হিসেবে আমরা খুব আশাবাদী যে কম বয়সে মৃত্যু এড়াতে পারব মানুষের এবং হার্টের অসুস্থতার ভালো ও কার্যকরী চিকিৎসা করতে পারব কলকাতার মানুষের।”
ডঃ রবীন চক্রবর্তী, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান, মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল ( মণিপাল হসপিটালের অন্তর্গত), বলেন,” ২৫-৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে যেভাবে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে, সেটা সত্যি খুব দুশ্চিন্তার। গত এক দশকে ৫০ বছর হওয়ার আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৫০% এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ৪০ তম জন্মদিন পালন করার আগেই ২৫% এর বেশি মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানা যাচ্ছে। এমনকি কম বয়সী মহিলারাও অনেকে হার্ট ফেল করে মারা যাচ্ছেন।আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন এর রিসার্চ অনুসারে, গত এক দশকে, ৫৫ বছরের চেয়ে কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই তথ্যগুলো মাথায় রেখে, ডাক্তার হিসেবে আমাদের মনে হয় এই পরিস্থিতি এড়াবার জন্য প্রিভেনটিভ পদ্ধতি, দ্রুত ডায়াগনসিস এবং সময়মত চিকিৎসা দরকার। এই ক্ষেত্রে মণিপাল হসপিটালের হৃদয় জুড়ে কলকাতা একটি সময় মত প্রয়াস যা কলকাতার মানুষের হার্ট সুস্থ রাখতে পারে। আমাদের সমগ্র কমিউনিটিকে আরো শেখাতে হবে, তার সাথে সার্বিক ভাবে সমাজকে এবং কিছু ব্যবহার পরিবর্তন করতে হবে, যাতে হার্টের রোগ কমানো যায় এবং মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।”
ডঃ প্রকাশ কুমার হাজরা, ডিরেক্টর এবং বিভাগীয় প্রধান, কার্ডিওলজি, মণিপাল হসপিটালস, ঢাকুরিয়া,” এই পরিকল্পনা আমরা ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে তে করছি, যাতে কলকাতা শহরের মানুষ তাদের হার্টের সুস্থতা নিয়ে সচেতন থাকেন। এছাড়া আমাদের লক্ষ্য থাকছে সাধারণ মানুষকে সিপিআর টেকনিকে ট্রেনিং দেওয়া, যেটা শুধু অনন্য নয়, ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বটে। সিপিআর জানলে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে কারণ খুব ন্যূনতম প্রচেষ্টায় রিসাসিয়েট করা সম্ভব হার্টকে যতক্ষণ না হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া মানুষকে হসপিটালে ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে।এই ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে তে আমরা শপথ নিয়েছি ‘মিশন টু টু থ্রি’ অর্থ হল ইতিমধ্যেই দুই শতাংশ ভারতীয় সিপিআর কি জানেন, আমরা সাধারণ মানুষকে ট্রেনিং দিয়ে এটি তিন শতাংশ করতে চাই, যাতে আরও বেশি মানুষ এই ট্রেনিং নিতে এগিয়ে আসেন।”
এই প্যানেল আলোচনার সময় ডাক্তাররা বেশ কিছু বিষয় তুলে ধরেন (নিচের অ্যানেক্সার দেখতে হবে)। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা নিজেদের মধ্যে তথ্যের আদান প্রদান করেন। এছাড়া তারা কার্ডিয়াক স্বাস্থ্য, লিবারাল মেডিক্যাল প্রিভেনটিভ প্রকারভেদ এবং কার্ডিয়াক ট্রিটমেন্টের বর্তমান ট্রেন্ড নিয়ে আলোচনা করেন ও বক্তব্য তুলে ধরেন।
ওয়ার্ল্ড হার্ট ফাউন্ডেশন অনুসারে, সারা পৃথিবীতে, প্রতি ৩টি মৃত্যুর মধ্যে একটির কারণ হল কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ। এর মধ্যে বেশিরভাগটাই প্রিম্যাচিওর হার্টের রোগ। তবে এটা ঠিক যে রোগীকে গোল্ডেন আওয়ারের মধ্যে হাসপাতালে আনতে পারলে স্ট্রোক আটকানো সম্ভব এবং তার পর্যাপ্ত চিকিৎসাও। এই ধরনের হার্ট স্মার্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে মণিপাল হসপিটাল খুব আত্মবিশ্বাসী যে সামনের দিনে মানুষের হার্টের অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়ে যাওয়া সম্ভব।

Subscribe to our magazine

━ more like this

Dr. V. Narayanan, ISRO Chairman, Receives the Prestigious G P Birla Memorial Award

The G P Birla Archaeological Astronomical and Scientific Institute proudly announced that Dr. V. Narayanan, Chairman of the Indian Space Research Organisation (ISRO) and...

প্রকাশ্যে এল ধুমকেতু ছবির দ্বিতীয় গান, অনুপমের ‘মা’ শুনে আবেগে ভাসলেন শ্রোতারা

অবশেষে অপেক্ষার অবসান। বেশ কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আনাগোনা করছিল একটি পোস্ট, কিছুদিনের মধ্যেই মুক্তি পাবে ‘ধুমকেতু’ ছবির দ্বিতীয় গান। সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে...

শহরে হয়ে গেল নতুন থ্রিলার ছবি “মহরত” এর গ্র‍্যান্ড পোস্টার লঞ্চ। প্রকাশ্যে ছবির ফার্স্ট লুক

পরিচালক আতিউল ইসলাম এর পরিচালনায় জুটিতে আসছে মীর ও রিত্তিকা সেন।ছবির নাম "মহরত"। সম্প্রতি শহরে হয়ে গেল সেই ছবির গ্র‍্যান্ড পোস্টার লঞ্চের অনুষ্ঠান। একগুচ্ছ...

Ultraviolette Solidifies Its Presence in East India with New Experience Centre in Kolkata

Following its recent global launch across Europe, Ultraviolette, a global brand and makers of the ‘Fastest Indian Motorcycle’, continues its expansion across India with...

Axis Bank Partners with Antara Psychiatric Hospital to Establish Axis Bank Antara Institute of Health Sciences

Axis Bank, one of the largest private sector banks in India, is proud to announce the signing of a Memorandum of Understanding (MoU) with...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here