প্রতি বছর ১৭ই নভেম্বর পালিত হয় জাতীয় মৃগীরোগ দিবস, যা মৃগীরোগ সম্পর্কে সচেতনতা, প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং কার্যকর চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরে। এই স্নায়বিক রোগটি বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে, তবে অনেকেই কলঙ্ক ও অজ্ঞতার কারণে সাহায্য নিতে দ্বিধা করেন। অথচ, আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃগীরোগ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, যা রোগীদেরকে পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপন করতে সক্ষম করে।
এই বিশেষ দিনে, নারায়ণা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা মৃগীরোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য উৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। সময়মতো সঠিক রোগ নির্ণয় এবং একটি সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা পরিকল্পনা রোগ নিয়ন্ত্রণে এবং রোগীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়ক।
নারায়ণা হাসপাতাল, আরএন টেগোর হাসপাতাল, মুকুন্দপুরের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও নিউরোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ অম্লান মণ্ডল বলেছেন,
“জাতীয় মৃগীরোগ দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মৃগীরোগের ব্যাপারে সচেতনতা, প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং সহানুভূতিশীল চিকিৎসার কতটা গুরুত্ব রয়েছে। মৃগীরোগ লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে, কিন্তু কলঙ্ক ও জ্ঞানের অভাবে অনেকেই সাহায্য নিতে পিছিয়ে যান। আধুনিক চিকিৎসার উন্নতির মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃগীরোগ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, যা রোগীদের জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারে। প্রাথমিক সনাক্তকরণ, সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা এবং ধারাবাহিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন, আমরা মৃগীরোগের কলঙ্ক দূর করি, নিজেদের শিক্ষিত করি এবং মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সহায়ক পরিবেশ গড়ে তুলি যাতে তারা প্রাপ্য চিকিৎসা পেতে পারেন।”
নারায়ণা হাসপাতাল, হাওড়ার কনসালটেন্ট নিউরোলজিস্ট ডাঃ অরিন্দম দাস বলেছেন,
“প্রতি বছর ১৭ই নভেম্বর জাতীয় মৃগীরোগ দিবস পালিত হয়, যাতে এই স্নায়বিক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা যায়। মৃগীরোগ বিভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে, তবে প্রধানত এটি চেতনা হারানো, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অস্বাভাবিক নড়াচড়া, চোখ ওপরে ওঠা এবং মুখ দিয়ে ফেনা আসার মতো উপসর্গের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এটি কখনও কখনও জীবনহানির কারণ হতে পারে। তাই রোগ লুকিয়ে না রেখে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কার্যকর চিকিৎসার মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এমনকি ওষুধে যদি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার অনেক সময় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।”
নারায়ণা হাসপাতাল সকলকে মৃগীরোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার, এর উপসর্গ বোঝার এবং আক্রান্তকারীদের জন্য কলঙ্ক দূর করতে সহায়ক ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। প্রাথমিক রোগ নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্বাস্থ্যকর ও পরিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারেন।