সঙ্গীত মানবজাতির একটি সর্বজনীন ভাষা। চারদিকে পাখির কিচিরমিচির শব্দ, নদীর কুলকুল ধ্বনি, মন্দিরের পবিত্র সঙ্গীত, মসজিদের আজান সব মিলিয়ে সঙ্গীত সর্বত্রই বিদ্যমান । গ্রামের পথশিল্পীদের ভোরবেলা ভক্তিমূলক গান, বিয়ের অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় উৎসব উদযাপনে
ব্যান্ড পার্টির মিউজিশিয়ানদের মিউজিক যাদের অন্যতম প্রধান মঞ্চ হিসেবে পথকেই বিবেচনা করা যেতে পারে।
শহর কলকাতা এই মিউজিক ফেস্টিভ্যালের আগের চারটে সিজনের সাক্ষী থেকেছে । বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক কর্মী তথা জনসংযোগ আধিকারিক সুদীপ্ত চন্দ এই অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক, সঙ্গী সোমা দাস, লন্ডনের একজন এনআরআই সঙ্গীতশিল্পী। এই বছর ২৯ নভেম্বর,২০২৪ -এ পঞ্চম সিজনটি শহরের ক্রাফ্ট কফি ( ইনফিনিটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ) সেক্টর ফাইভ -এ অনুষ্ঠিত হলো।যে সকল সঙ্গীতশিল্পীরা গ্রাম থেকে শহরে রাস্তায় পারফর্ম করেন তারা এই উদ্যোগের মূল কান্ডারী।
শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স ২৯ নভেম্বর ২০২৪-এ কলকাতা স্ট্রিট মিউজিক ফেস্টিভ্যাল পঞ্চম সিজন নিবেদন করলেন সহায়তায় ছিলেন ক্রাফ্ট কফি,ইনফিনিটি , ফ্লিক্সবাগ মিউজিক , সোমা দাস, কিংশুক দাস প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তরা চৌধুরী, সৌম্য দাশগুপ্ত, রকেট মন্ডল, রূপক সাহা, কর্ণধার, শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স প্রমুখ। ইনফিনিটি এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অনিন্দ্য দাস, ভাইস প্রেসিডেন্ট, মার্কেটিং।
সঙ্গীত পরিবেশনে ছিলেন শহরের দুই যুব-শিল্পী সৌরজ্যোতি- কৃষ্ণেন্দু যাঁরা রাস্তায় বেহালা ও গিটার বাজান, পরিচিত ‘থার্ড স্টেজ’ নামে ( সরস্বতী নদী তীরে ), গানে থাকছেন ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় মিউজিক অ্যাকাডেমির ছাত্র -ছাত্রীরা ( প্রান্তরের গান আমার ), মাধুর্য মুখোপাধ্যায়( শোনো কোনো একদিন ) , চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও মানু ( আমি চলতে চলতে থেমে গেছি ), জয়া নাগ ( দূরন্ত ঘূর্ণির ), শৌভিক মুখোপাধ্যায় সেতারে শোনাবেন সলিল সুরের ধুন ( সুরের ঝর্ণা ), গীটারে সলিল সঙ্গীত পরিবেশন করবেন বিশিষ্ট শিল্পী তথা কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক সুধীন দাশগুপ্তের সুপুত্র সৌম্য দাশগুপ্ত ( দূর নয় বেশি দূর ) , অন্তরা চৌধুরী গান ‘সে গান আমি যাই যে ভুলে’ । সলিল চৌধুরীর পৃষ্টপোষকতায় রুমা গুহঠাকুরতা এর উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার। এদিন সঙ্গীত পরিবেশন করবেন তাঁদের শিল্পীরাও ( পথে এবার নামো সাথী )। গীটারে রকেট মন্ডল পরিবেশন করেন সলিল সঙ্গীত ( চলে যে যায় দিন )।সলিল চৌধুরীর গুণমুগ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের সঙ্গীত শিল্পীদের উপরেও কম নয়। বাংলা ব্যান্ডের জগতে দুই বিশেষ পরিচিত নাম ক্যাকটাস, শহর। এই দুই গানের দলের লিড ভোকালিস্ট সিধু ( দিল তরপ তরপকে ) , অনিন্দ্য বসু ( পাগল হাওয়া ) গানে, গানে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানালেন কিংবদন্তি সুরকারকে। শিসধ্বনিতে সলিল চৌধুরীকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তরুণ গোস্বামী ( মন মাতাল )। বিশেষ অতিথি অন্তরা চৌধুরী, রূপক সাহা, কর্ণধার, শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দেবাশীষ বসু।
সুদীপ্ত চন্দ জানালেন, “এটি সেইসব সঙ্গীতশিল্পীেদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি যাঁরা রাস্তায় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন। এটি অবশ্যই একটি ভিন্ন ধরনের সঙ্গীতের উৎসব, বরং এটিকে সঙ্গীতের মাধ্যমে জীবনের উদযাপন হিসাবেও বিবেচনা করা যেতে পারে। এবছর সলিল চৌধুরীর গানে, গানে স্মরণ করা হলো বাংলার তথা ভারতীয় সঙ্গীতের এক বর্ণময় অধ্যায়কে।”