সম্প্রতি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে আমানত ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের উদ্যোগে এবং ইটার্নাল-স্কাই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হলো এক বিশেষ ক্যারিয়ার গাইডেন্স সেশন ও আমানত স্কলারশিপ বিতরণ অনুষ্ঠান। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় কৃতী ছাত্র হাফেজ আবু ওসামার আরবি কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে। বাংলা ও ইংরেজি তর্জমা যথাক্রমে জালালউদ্দিন আহমেদ ও আস্তানা পারভীন পরিবেশনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর রফিকুল ইসলাম, উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি ও সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ হাসান ইমরান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আমানত ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহ আলম, সেক্রেটারি জালালউদ্দিন আহমেদ, কো-অর্ডিনেটর জিয়ারুল লস্কর, এমআইএস কো-অর্ডিনেটর আরিফ নাসরুল্লাহ, ট্রেজারার সাহিদ হোসেন সিদ্দিকী, ইটার্নাল স্কাই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খালিদ ফাজলুল্লাহ, জনসেবার প্রেসিডেন্ট গোলাম মোহাম্মদ লাডলা, রাইট ট্রাকের সেক্রেটারি আশরাফ আলী, অল ইন্ডিয়া ডিস্ট্রিক্ট ইমাম অ্যান্ড মোয়াজ্জিন অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মৌলানা নিজামউদ্দিন বিশ্বাস, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসর মেহেদি হাসান, সমাজসেবী খায়রুল বাসার, অ্যাডভোকেট মাসুদ করিম, সমাজসেবী সালাউদ্দিন আহমেদ-সহ অন্যান্য গুণীজন, ট্রাস্টের সদস্য ও কৃতী শিক্ষার্থীরা।
বিশেষজ্ঞ বক্তারা আধুনিক যুগে ক্যারিয়ার গড়ার দিশা, উচ্চশিক্ষার সুযোগ এবং দক্ষতা উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। খালিদ ফাজলুল্লাহ পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং পরিচালনা করেন।
আমানত ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহ আলম তার অভিভাষণে অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, ১৯৮৮ সালে বায়তুজ জাকাত হিসেবে যাত্রা শুরু করে পরবর্তীতে আমানত জাকাত মিশন নামে আমানত ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট গত ৩৭ বছর ধরে নিয়মিতভাবে মেধাবী ও প্রয়োজনীয় ছাত্র-ছাত্রীদের স্কলারশিপ প্রদান করে আসছে। তিনি সকল অতিথি, সহযোগী প্রতিষ্ঠান এবং সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
প্রফেসর মেহেদি হাসান ইসলামি শিক্ষা ও গাজার করুণ অবস্থার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “দাতার হাত গ্রহীতার হাতের চেয়ে উত্তম।”
জালালউদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, “আজকের দিনে শিক্ষা শুধু ডিগ্রি অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সমাজ ও জাতির প্রতি দায়িত্ববোধ জাগ্রত করার অন্যতম মাধ্যম। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বহু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, আর এই বাধা অতিক্রম করতে হলে আত্মবিশ্বাস, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং নিয়মিত অধ্যবসায় প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “মানুষ নিজেদের দায়িত্ব অনেক সময় ভুলে যায়, তাই নতুন প্রজন্মকে নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তার এই অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তব্য উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নতুন উৎসাহ এবং উদ্দীপনা জাগায়।
মৌলানা নিজামউদ্দিন বিশ্বাস আমানতের এই অভূতপূর্ব কাজের প্রশংসা করেন। তিনি আরও বলেন, তাদের রাজ্যে হাজারের বেশি ইমাম ও মোয়াজ্জিন রয়েছেন এবং তারা আমানতের কাছে অনুরোধ করবেন তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করতে।
অনুষ্ঠানে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সম্মাননা জানানো হয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে শতাধিক কৃতী, মেধাবী ও দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীর হাতে স্কলারশিপ চেক ও সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন খালিদ ফাজলুল্লাহ এবং তাকে সহযোগিতা করেন জালালউদ্দিন আহমেদ।