ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) জোট বাঁধবে স্মার্ট ফোনের সঙ্গে। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে স্বচক্ষে দেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনে চিকিৎসক মুঠোফোনে নিখুঁত ভাবে জেনে নিতে পারবেন রোগীর শরীর গতিক। তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিলে রোগীকে স্থিতিশীল করা অনেক সহজ হবে। কলকাতা তথা পূর্ব ভারতে প্রথম স্মার্ট আইসিইউ শুরু হল সল্টলেকের এইচপি ঘোষ হাসপাতালে।
ইস্টার্ণ ইন্ডিয়া হার্ট কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অগ্রণী এইচপি ঘোষ হাসপাতাল কলকাতা তথা পূর্ব ভারতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে সেরা চিকিৎসা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানালেন হাসপাতালের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সোমনাথ ভট্টাচার্য। ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডা হীরক ভট্টাচার্য এবং ডা তৃণাঞ্জন সারেঙ্গীর তত্ত্ববধানে এই স্মার্ট আইসিইউ এর কাজ শুরু হল। গুরুতর অসুস্থ ও সংকটজনক রোগীর প্রাণ বাঁচাতে ক্রিটিকাল কেয়ারই ডাক্তারদের তুরুপের তাস। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে ইনটেনসিভ কেয়ারে সবরকমের সাপোর্ট দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনাই এই ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য তা সবারই জানা। আর নাগাড়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নজরে থাকায় জটিল রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমবে প্রায় ৪০%।
ডা হীরক ভট্টাচার্য জানালেন মারাত্মক হার্ট অ্যাটাক, হেমারেজিক বা ইসকিমিক ব্রেন স্ট্রোক, নিউমোনিয়া, সিওপিডি ও অ্যাজমার কারনে সাংঘাতিক শ্বাসকষ্ট, দুর্ঘটনায় গুরুতর চোট, ওষুধের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ওষুধে অ্যালার্জির জন্যে শ্বাসনালী ফুলে গিয়ে শ্বাসকষ্ট, অন্যান্য কোনও গুরুতর অসুখের কারণে শ্বাসকষ্ট, হার্ট, কিডনি, ফুসফুস, লিভার সহ কোনও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কাজ সাময়িক ভাবে বিপর্যস্ত হলে রোগীকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়।
ডা তৃণাঞ্জণ সারেঙ্গী বললেন অনেক সময় রোগীর অবস্থা খুব ঝুঁকিপূর্ণ না হলেও হার্টের বাইপাস সার্জারি, অরগ্যান ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট সহ যে কোনও মেজর সার্জারির পর চটজলদি বিপদের মোকাবিলার জন্যে রোগীকে আইসিইউতে রাখা হয়। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সারাক্ষণ নজরদারিতে রাখা হয়।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্মার্ট ফোনে রোগীদের মনিটরিং করার অত্যাধুনিক প্রযুক্তিই স্মার্ট আইসিইউ এর মূল লক্ষ্য। অসুস্থ মানুষটির অবস্থার অবনতি হবার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ অ্যালার্ম আইসিইউ এ কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্সের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ সিনিয়র কন্সাল্ট্যান্টকেও সতর্ক করে দেবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের মোবাইলে রোগীর যাবতীয় প্যারামিটার ও টেস্টের রিপোর্ট দেখা যাবে। চিকিৎসক অকুলস্থলে না থাকলেও রেসিডেন্ট ডাক্তারকে ফোনে সব নির্দেশ দিতে পারবেন। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়ায় রোগী উপকৃত হবেন। রোগীদের সুস্থতার হার অনেকাংশে বাড়াতে সক্ষম স্মার্ট আইসিইউ। প্রথম পর্যায়ে ৪৩টি শয্যা নিয়ে স্মার্ট আইসিইউ শুরু হল।