পুজোর আর মাত্র কিছুদিন বাকি। বিশ্বের আপামর বাঙালি প্রস্তুতি শুরু করেছেন বাংলা তথা বাঙালিদের সর্ব শ্রেষ্ঠ উৎসবের। পুজে আসছে, আর পুজোর গান আসবে না, তা কি হয়!
ইংল্যান্ড নিবাসী মধুছন্দা গঙ্গোপাধ্যায় শহর কলকাতায় এসে বানিয়ে ফেললেন এবারের তাঁর পুজোর গান, আর কলকাতায় বসে কাজটা সারলেন বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক -বাদ্যযন্ত্রী দেবজ্যোতি মিশ্র।
নস্টালজিয়া ফেরালেন দু’জনে মিলে। ১৯৬৮ সালে ৭৮ আরপিএম এ প্রকাশিত আর.ডি.বর্মন ও আশা ভোঁসলে জুটির প্রথম বাংলা গান তথা বেসিক রেকর্ডের অন্যতম জনপ্রিয় গান ‘যাব কি যাব না, ভেবে ,ভেবে হায়রে যাওয়া তো হলো না’,গানটি নতুন মোড়কে পরিবেশন করলেন। পুজোর প্যান্ডেলে বহু শ্রুত গান গুলোর মধ্যে এই গানটি অন্যতম।
বাংলা গানে ব্রাজিলিয়ান ছন্দ বোসা নোভা-এ আপামর বাংলা গানের শ্রোতাদের মাতিয়ে ছিলেন আরডি-আশা জুটি। শুরু হয়েছিল বাংলা আধুনিক গানে এক নতুন অধ্যায়ের। দেবজ্যোতি এবং মধুছন্দা ফিরে গেলেন সেই মাইকে বাজা ফেলে আসা পুজোর দিন গুলোয়। তখন অতো থিমের পুজো না থাকায়, প্যান্ডেলে, প্যান্ডেলে পুজোর গানই বাজতো।
এই নতুন মোড়কে “যাবকি যাবনা’ শুনতে বেশ লাগে। গানের নতুন সঙ্গীতায়োজনে ইন্টারলিউডে এসে জুড়েছে আরডি-এর অন্যান্য বেশ কিছু জনপ্রিয় গানের সুর। পল্লব গায়েনের তৈরি মিউজিক ভিডিও বেশ নেশা জাগায়।
উপরি পাওনা গানের বুকলেট। এক সময় শারদ অর্ঘ্য প্রকাশিত হতো। আর ছায়াছবির বুকলেট। সেই নস্টালজিয়া ফিরিয়ে আনতে গানের বুকলেট প্রকাশ করলেন দেবজ্যোতি ও মধুছন্দা। তাতে আছে অরিজিনাল ৭৮ আরপিএম এর সেই ১৯৭৮ এ প্রকাশিত রেকর্ড এর ছবি। রেকর্ডের নাম্বার, উল্টো পিঠের গানের রেকর্ড লেবেল, আরডি-আশা জুটির কিছু কম দেখতে পাওয়া ছবি, গানের কথা ( গীতিকার – গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার), দেবজ্যোতি মিশ্র ও মধুছন্দা গঙ্গোপাধ্যায় এর এই গান নিয়ে কিছু কথা। শিল্পী মধুছন্দা গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ” গানটা খুব ছোটবেলায় পুজো প্যান্ডেলেই শোনা। শুনেই ভালো লেগে যায়। আরো পরবর্তী সময়ে গানটা আরো বুঝতে পারি, তার প্রাণশক্তি, ছন্দ, সুন্দর সুর সব মিলিয়ে একটা ভালো লাগার স্মৃতি। কলেজের অনুষ্ঠানে আরডি-আশা জুটির গান গাইতাম। দেবুদা গানটা নতুন মোড়কে যখন আমায় শোনান ,আমার খুবই ভালো লাগে। অসাধারণ একটা ট্র্যাক উপহার দিয়েছেন দেবজ্যোতি মিশ্র। আমি নিজের মতো করে গেয়েছি। “
দেবজ্যোতি মিশ্র বললেন, “গানটা ১৯৬৮ সালের। খুব অল্প বয়সে শোনা গান, তখনই মনে হয়েছিল এতে একটা নিষিদ্ধ ব্যাপার আছে। মাইকে গান বাজছে এটা যেমন শুনছি, কান দুটো খোলা আছে তাই শুনছি, কিন্তু ভীতর থেকে যেন একটা আড়াল করে শুনছি।আজ যখন রি-অ্যারেন্জ করলাম গানটাকে, মা-এর কথা মনে পড়ে গেল,তখন মা’র দিকে চোখ পড়লে চোখ সরিয়ে নিচ্ছি,কান থেকে গান তো সরানো যায়নি”।